সীমান্তে গোলার শব্দ কমেছে, মিয়ানমারের ১’শ বিজিপি আশ্রয় নিলেন

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি :

নাফের ওপাড়ে চলমান সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর যুদ্ধাবস্থার মধ্যে কক্সবাজারের টেকনাফে ফের আশ্রয় নিয়েছেন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১’শ বেশির সদস্যরা। মূলত জীবন বাঁচাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এদের মধ্য সেদেশের সেনা বাহিনীর সদস্যও রয়েছে বলে জানা গেছে। 

বৃহস্পতিবার ভোর থেকে টেকনাফ সীমান্তের সাবরাংয়ের তিনটি পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ করেছিল বিজিপির সদস্যরা। পরে এদের বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা হেফাজতে নেয়। কিন্তু এ বিষয়ে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে কোন আনুষ্টানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের বিজিপির সদস্য অনুপ্রবেশ করেছে বলে স্বীকার করেছে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ফের কিছু নতুন করে সেদেশের বিজিপির সদস্য এপারে আশ্রয় নিয়েছে বলে শুনেছি। তারা আমাদের বিজিবি-কোস্ট গার্ডের হেফাজতে রয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সর্তক অবস্থানে আছেন।’ 

এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মিয়ানমরের সীমান্তে গোলার বিকট শব্দ কমেছে টেকনাফ সীমান্তে। তবে বুধবার রাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল ও ভারী গোলার বিকট শুনা গেছে এই সীমান্তে। ফলে সীমান্তের মানুষের শঙ্কা, নতুন করে রোহিঙ্গার পাশাপাশি সেদেশের বিজিপির আরও সদস্য এপারে অনুপ্রবেশ ঘটলে পারে। এর আগে গত শুক্রবার সেন্টমার্টিনে অনুপ্রবেশ করা মিয়ানমারের ২ বিজিপিসহ ৩১ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। 

তবে নতুন করে কোন অনুপ্রবেশকারী ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়ে টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সীমান্তে সার্বক্ষনিক বিজিবির সদস্যরা টহল দিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমারের এমন পরিস্থিতিতে সীমান্তের যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’ 

সীমান্তের বাসিন্দারা বলছে, মিয়ানমারে চলমান টানা চলমান যুদ্ধে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গোলার বিকট শব্দ কম পাওয়া গেছে। তবে গতকাল রাত থেকে ব্যাপক গোলার বিকট শব্দ আমাদের বাড়িঘর কেঁপে ওঠে। এদিকে, নিরপাত্তার কারণে সীমান্ত মানুষদের সর্তক থাকতে বলা হয়েছে। 

সীমান্তের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন পর সীমান্তে একটু শান্ত হয়েছে। আজকে সকাল থেকে কোন গোলার শব্দ পাওয়া যায়নি। যদি গভীর রাতে গোলার বিকট শব্দ না হয়, অন্তত একদিন শান্তিতে ঘুমানো যাবে। তবে শুনেছি সেদেশের কিছু লোকজন সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করেছে।’  

এ বিষয়ে টেকনাফের নৌ-পুলিশের ইনচার্জ পরিদর্শক তপন কুমার বিশ্বাস জানান, ‘আজকে তেমন কোন গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যায়নি। অন্যদিনের চেয়ে সীমান্ত সকাল থেকে শান্ত রয়েছে। তবে আমরা সীমান্তে প্রতিনিয়িত নজরদারী রাখছি, যেন নতুন করে কোন অনুপ্রবেশ না ঘটে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *